বৃহচ্চ তদ্ দিব্যমচিন্ত্যরূপং
সূক্ষ্মাচ্চ তৎ সূক্ষ্মতরং বিভাতি।
দূরাৎ সুদুরে তদিহান্তিকে চ
পশ্যৎস্বিহৈব নিহিতং গুহায়াম্॥৭
অন্বয়: তৎ (তিনি অর্থাৎ সেই ব্রহ্ম); বৃহৎ (সর্বব্যাপী); চ (এবং); দিব্যম্ (জ্যোতিস্বরূপ); অচিন্ত্যরূপম্ (চিন্তার অতীত); তৎ সূক্ষ্মাৎ চ সূক্ষ্মতরম্ (তিনি সূক্ষ্ম থেকেও সূক্ষ্মতর); [রূপে] বিভাতি (বিবিধ রূপে প্রকাশ পান); তৎ (তিনি); দূরাৎ (দূর থেকে); সুদূরে (আরও দূরে); অন্তিকে চ ইহ (এই দেহে; অতি কাছে); পশ্যৎসু (দ্রষ্টাদের কাছে); ইহ এব গুহায়াম্ (এই গুহাতে অর্থাৎ হৃদয়ে); নিহিতম্ (নিহিত আছেন)।
সরলার্থ: ব্ৰহ্ম অনন্ত, ইন্দ্রিয়াতীত এবং কল্পনার অতীত। ইনি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম (সূক্ষ্মতমের চেয়েও সূক্ষ্মতর), তিনি দূরতমের চেয়েও দূরে রয়েছেন আবার একই সাথে খুব কাছেও রয়েছেন। মানুষের হৃদয়-পদ্মেই তিনি বিরাজ করেন।
ব্যাখ্যা: ব্রহ্ম বলতে আমরা কি বুঝি? ব্রহ্মের স্বরূপই বা কি? ব্রহ্ম কথাটির অর্থ ‘বৃহৎ’ বা ‘বৃহত্তম’। ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করতে হলে কথায় ও কাজে সত্যকে ধরে থাকতে হবে। ব্রহ্ম বাক্যমনাতীত। ব্রহ্মকে কল্পনা করা যায় না। ইনি স্বয়ংপ্রকাশ এবং আকাশের চেয়ে সূক্ষ্ম। প্রকৃতপক্ষে তিনি আছেন বলেই এই জগতের সব কিছুর অস্তিত্ব আছে। সূর্য, চন্দ্র ও অন্যান্য উজ্জ্বল বস্তুর মধ্য দিয়ে তিনি নিজেকেই প্রকাশ করেন। ব্রহ্মই এসব বস্তুর কারণ। সকল প্রাণীর হৃদয়ে ব্রহ্ম বিরাজ করেন। কিন্তু তিনি আমাদের হৃদয়ে থাকলেও অবিদ্যার জন্য আমরা তা বুঝতে পারি না। যোগিগণ নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান। তাঁরা নিজ হৃদয়ে ব্রহ্মের উপস্থিতি অনুভব করে ব্রহ্মের সাথে এক হয়ে যান।