তেঽগ্নিমব্রুবন্ জাতবেদ এতদ্বিজানীহি
কিমেতদ্ যক্ষমিতি তথেতি॥৩
তদভ্যদ্রবত্তমভ্যবদৎ কোঽসীতি অগ্নির্বা
অহমস্মীত্যব্রীজ্জাতবেদা বা অহমস্মীতি॥৪
তস্মিংস্ত্বয়ি কিং বীর্যমিতি অপীদং
সর্বং দহেয়ং যদিদং পৃথিব্যামিতি॥৫
তস্মৈ তৃণং নিদধাবেতদ্দহেতি; তদুপপ্রেয়ায়
সর্বজবেন, তন্ন শশাক দগ্ধুম্, স তত এব
নিববৃতে—নৈতদশকং বিজ্ঞাতুং যদেতদ্ যক্ষমিতি॥৬
অন্বয়: তে অগ্নিম্ অব্রুবন্ (তাঁরা অগ্নিকে বললেন); জাতবেদ (হে জাতবেদ [অর্থাৎ যিনি সব সৃষ্ট পদার্থকে জানেন। এটা অগ্নির আর এক নাম]); এতৎ বিজানীহি (এটা জেনে আসুন); কিম্ এতৎ যক্ষম্ ইতি (এই দিব্যমূর্তি কে); তথা ইতি (তাই হবে)। তৎ (তাঁর কাছে [অর্থাৎ দিব্যমূর্তির কাছে]); অভ্যদ্রবৎ (গেলেন [অর্থাৎ অগ্নি গেলেন]); তম্ অভ্যবদৎ (তাঁকে বললেন [অর্থাৎ সেই দিব্যমূর্তি অগ্নিকে বললেন]); কঃ অসি ইতি (আপনি কে); অব্রবীৎ অগ্নিঃ বৈ অহম্ অস্মি ইতি ([অগ্নি] বললেন, আমিই অগ্নি); জাতবেদাঃ বৈ অহম্ অস্মি ইতি (আমিই জাতবেদ [সর্বজীবের জ্ঞাতা])। তস্মিন্ (তাতে [অর্থাৎ যেহেতু আপনি এত অসাধারণ]); ত্বয়ি (আপনার ভিতর); কিং বীর্যম্ ইতি (কি ধরনের শক্তি); ইদং সর্বম্ অপি দহেয়ম্ (আমি এই সমস্তই পুড়িয়ে ফেলতে পারি); পৃথিব্যাম্ ইদং যৎ ইতি (এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে)। তস্মৈ (তাঁর সামনে); তৃণং নিদধৌ (একটি তৃণ রাখলেন); এতৎ দহ ইতি (এটিকে পোড়ান); তৎ উপপ্রেয়ায় (তার দিকে ধেয়ে গেলেন); সর্বজবেন (দ্রুত বেগে [অর্থাৎ, সর্বশক্তি প্রয়োগ করে]); তৎ ন শশাক দগ্ধুম্ (সেটিকে পোড়াতে পারলেন না); সঃ ততঃ এব নিববৃতে (তাঁর কাছ থেকে [অর্থাৎ, দিব্যমূর্তির কাছ থেকে] তিনি [অগ্নি] ফিরে এলেন); ন এতৎ অশকং বিজ্ঞাতুম্ (আমি জানতে পারলাম না); যৎ এতৎ যক্ষম্ ইতি (এই দিব্যমূর্তি কে)।
সরলার্থ: তাঁরা অগ্নিকে বললেন, ‘হে সর্বজ্ঞ জাতবেদ, এই দিব্য সত্তার পরিচয় জেনে আসুন।’ (উত্তরে অগ্নি বললেন 🙂 ‘তাই হবে।’
অগ্নি দিব্যমূর্তির কাছে গেলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি কে?’ উত্তরে অগ্নি বললেন, ‘আমি অগ্নি, আমি সামান্য নই। আমিই জাতবেদ (অর্থাৎ, সব প্রাণীকেই আমি জানি)।’
দিব্যসত্তা প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি তো দেখছি অসাধারণ। কিন্তু আপনার মধ্যে কোন্ বিশেষ শক্তি আছে?’ (অগ্নি বললেন 🙂 ‘এই পৃথিবীর সবকিছু আমি পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারি।’
(দিব্যমূর্তিটি) অগ্নির সামনে একটি তৃণখণ্ড রেখে বললেন, ‘এটিকে পোড়ান তো।’ (অগ্নি) সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও সেটি পোড়াতে পারলেন না। দিব্যমূর্তির কাছ থেকে ফিরে গিয়ে তিনি (দেবতাদের বললেন: ‘ওই দিব্যমূর্তির পরিচয় জানতে আমি ব্যর্থ হয়েছি।’
ব্যাখ্যা (Verse 3): সামনে অদ্ভুত মূর্তিটিকে দেখে দেবতারা হতবুদ্ধি হয়ে গেলেন। তিনি যে স্বয়ং ব্রহ্ম দেবতারা সে কথা বুঝতে পারলেন না। ব্ৰহ্ম স্বরূপত নিরাকার, তাঁর কোন রূপ নেই। কিন্তু গল্পের খাতিরে এখানে ব্রহ্মের একটা রূপ কল্পনা করা হয়েছে।
ব্যাখ্যা (Verse 4): অগ্নির কথার ভঙ্গিতে অহঙ্কারের ছাপ স্পষ্ট।
ব্যাখ্যা (Verse 5): ক্ষমতার গর্বে মত্ত হয়ে অগ্নি ভুলে গিয়েছিলেন যে, তাঁর শক্তি ব্রহ্মের কাছ থেকেই পাওয়া।