যস্যামতং তস্য মতং মতং যস্য ন বেদ সঃ।
অবিজ্ঞাতং বিজানতাং বিজ্ঞাতমবিজানতাম্॥৩
অন্বয়: যস্য অমতম্ (যিনি বলেন যে তিনি জানেন না); তস্য মতম্ (তিনিই জানেন); যস্য মতম্ (যিনি বলেন তিনি জানেন); সঃ ন বেদ (তিনি জানেন না); অবিজ্ঞাতম্ (অজ্ঞাত); বিজানতাম্ (তাঁদের কাছে যাঁরা বলেন তাঁরা জানেন); বিজ্ঞাতম্ (জ্ঞাত); অবিজানতাম্ (তাঁদের কাছে যাঁরা বলেন তাঁরা জানেন না)।
সরলার্থ: যিনি বলেন যে, তিনি (ব্রহ্মকে) জানেন না, তিনিই ব্রহ্মকে জানেন; যিনি বলেন যে, তিনি ব্রহ্মকে জানেন, তিনি ব্রহ্মকে জানেন না। যাঁরা বলেন যে, তাঁরা জানেন না, এ তত্ত্ব তাঁদেরই জানা; যাঁরা বলেন যে, তাঁরা জানেন, এ তত্ত্ব তাঁদের অজানা।
ব্যাখ্যা: যখন কোন জ্ঞানী ব্যক্তি বলেন যে, তিনি ব্রহ্মকে জানেন না, তখন বুঝতে হবে, তিনি ব্রহ্মকে জানেন, অর্থাৎ তিনি জানেন যে, ব্রহ্মকে ইন্দ্রিয়ের দ্বারা জানা যায় না। উভয় ক্ষেত্রেই ‘জানা’, এই ক্রিয়াপদটির সাহায্যে ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানকেই বোঝানো হয়েছে। যখন অজ্ঞ কেউ বলেন, ‘আমি জানি’ তখন তিনি শুধু ইন্দ্রিয়ের দ্বারা অর্জিত অভিজ্ঞতাকেই বোঝান। যাকে তিনি ব্রহ্ম বলে মনে করছেন, আসলে তা ব্রহ্ম নয়। ব্রহ্মের প্রকৃতি সম্পর্কে তাঁর কোন ধারণাই নেই। কিন্তু যখন কোন প্রাজ্ঞ ব্যক্তি বলেন, তিনি ব্রহ্মকে জানেন না, তখন সে কথার অর্থ হল—ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তু হিসাবে তিনি ব্রহ্মকে জানেন না। তিনি জানেন যে, ব্রহ্মকে এভাবে জানা যায় না; কেবলমাত্র অতীন্দ্রিয় অনুভূতির মধ্য দিয়েই তাঁকে জানা যায়। তাঁর কথা থেকেই বোঝা যায় তিনি যথার্থই ব্রহ্মকে জেনেছেন।