সত্যমেব জয়তে নানৃতং
সত্যেন পন্থা বিততো দেবযানঃ।
যেনাক্রমন্তষয়ো হ্যাপ্তকামা
যত্র তৎসত্যস্য পরমং নিধানম্॥৬
অন্বয়: সত্যমেব (সত্যেরই); জয়তে (জয় হয়); অনৃতং ন (মিথ্যার নয়); সত্যেন (সত্যের দ্বারা); বিততঃ (বিস্তৃত); দেবযানঃ পন্থাঃ (দেবযান নামক পথ); যেন হি (যার দ্বারাই); আপ্তকামাঃ (বিগতস্পৃহ); ঋষয়ঃ (ঋষিগণ); আক্রমন্তি (যান); যত্র (যেখানে); তৎ (সেই); সত্যস্য (সত্যের মধ্যে); পরমম্ (শ্রেষ্ঠ); নিধানম্ (ফল নিহিত)।
সরলার্থ: একমাত্র সত্যেরই জয় হয়, অসত্যের জয় হয় না। কারণ স্বর্গদ্বারে পৌঁছবার প্রশস্ত পথটি সত্যের দ্বারাই লাভ করা যায়। পূর্ণকাম ঋষিরা (যাঁদের কোন কামনা বাসনা নেই) সত্যের মাধ্যমেই তাঁদের পরম লক্ষ্যে পৌঁছান।
ব্যাখ্যা: আমরা সকলেই জানি, সত্যেরই জয় হয়, অসত্যের হয় না। কোন ধার্মিক ব্যক্তি অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রথমে হয়তো পরাস্ত হতে পারেন, কিন্তু পরিণামে সত্যেরই জয় হবে। আপাতদৃষ্টিতে আমাদের মনে হয় ব্যক্তিটি তো বেশ সুখেই আছে, কিন্তু শেষপর্যন্ত তার পতন অনিবার্য। তার অপকর্ম বেশিদিন গোপন থাকে না। তখন সমাজ তাকে ত্যাগ করে। তার সমস্ত চালাকি শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়।
আধ্যাত্মিক জীবনের শুরুতেও সত্য, শেষেও সত্য। অধ্যাত্ম পথে সাধক সবসময় সত্যকে ধরে থাকেন। তিনি সত্যের জন্য সব কিছুকে ত্যাগ করতে পারেন, কিন্তু কোন কিছুর জন্যই সত্যকে ত্যাগ করেন না। তাঁদের কাছে উপায়ও উদ্দেশ্যর মতো সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই সত্যের পথই হচ্ছে স্বর্গে যাওয়ার রাস্তা। কোন অবস্থাতেই সাধক এই সত্য থেকে সরে আসেন না। যে কোন মূল্যে তিনি এই পথকে ধরে থাকেন। আর শেষে তিনি সেই লক্ষ্যে পৌঁছান যা পূর্ণকাম, আপ্তকাম ঋষিরা লাভ করে থাকেন। এই লক্ষ্য হল—আত্মজ্ঞান বা মুক্তি। আত্মজ্ঞান লাভে সাধক অনন্ত শান্তি ও অপার আনন্দ লাভ করেন। সত্যই আধ্যাত্মিক জীবনের মূল চাবিকাঠি।