প্রণবো ধনুঃ শরো হ্যাত্মা ব্রহ্ম তল্লক্ষ্যমুচ্যতে।
অপ্রমত্তেন বেদ্ধব্যং শরবত্তস্ময়ো ভবেৎ॥৪
অন্বয়: প্রণবঃ (ওঁকার মন্ত্র); ধনুঃ (ধনুক); আত্মা হি (জীবাত্মাই); শরঃ (বাণ); ব্রহ্ম (ব্রহ্ম); তৎ লক্ষ্যম্ (সেই শরের লক্ষ্য); উচ্যতে (কথিত হয়); অপ্রমত্তেন (অপ্রমত্ত হয়ে, নির্ভুল ভাবে); বেদ্ধব্যম্ (ভেদ করা উচিৎ [এবং]); শরবৎ (সেই বাণের মতো); তন্ময়ঃ (লক্ষ্যের সঙ্গে অভিন্নরূপে); ভবেৎ (থাকবে [অর্থাৎ জীবাত্মা পরমাত্মার সঙ্গে মিলে এক হয়ে যাবে])।
সরলার্থ: ওঁকার ধনুক, জীবাত্মা শর, এবং ব্রহ্ম সেই শরের লক্ষ্যবস্তু বলে কথিত। নির্ভুলভাবে সেই লক্ষ্যকে শরবিদ্ধ করতে হবে। তাহলে সেই শর (জীবাত্মা) লক্ষ্যের (ব্রহ্মের) সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাবে। অর্থাৎ জীবাত্মা নিজেকে পরমাত্মার সঙ্গে অভিন্ন বোধ করবে।
ব্যাখ্যা: উপনিষদের বাণী হল এই ওম্ (প্রণব)। উপনিষদ এখানে বলছেন, আমাদের ‘ওম্’কে ধ্যান করতে হবে। শর হল জীবাত্মা, ওম্ হল ধনুক এবং লক্ষ্য স্বয়ং ব্রহ্ম। ধনুকটি তুলে লক্ষ্যভেদে সচেষ্ট হতে হবে। ‘অপ্রমত্তেন’—নির্ভুল ভাবে। শরটিকে অভ্রান্তভাবে লক্ষ্যে স্থির করতে হবে। অখণ্ড মনোযোগের সঙ্গে শরনিক্ষেপ করতে হবে। ব্রহ্মচিন্তায় শরটি যেন তন্ময় থাকে। জীবাত্মা তখন ব্রহ্মের সঙ্গে এক হয়ে যাবে।