অতঃ সমুদ্রা গিরয়শ্চ সর্বেঽস্মাৎ
স্যন্দন্তে সিন্ধবঃ সৰ্বরূপাঃ।
অতশ্চ সব ওষধয়ো রসশ্চ
যেনৈষ ভূতৈস্তিষ্ঠতে হ্যন্তরাত্মা॥৯
অন্বয়: অতঃ (এই পুরুষ [ব্রহ্ম] থেকে); সর্বে (সকল); সমুদ্রাঃ (সমুদ্র সমূহ); চ (এবং); গিরয়ঃ (পর্বত সমূহ [জন্মেছে]); অস্মাৎ (এই পুরুষ থেকে); সর্বরূপঃ সিন্ধবঃ (ছোট বড় নদী সমূহ); স্যন্দন্তে (প্রবাহিত হয়); অতঃ চ (এবং এই পুরুষ থেকে); সর্বাঃ (সকল); ওষধয়ঃ (ধানযব বৃক্ষলতা ইত্যাদি); চ (এবং); রসঃ (সব রস); যেন হি (যাঁর দ্বারা); এষঃ অন্তরাত্মা (এই অন্তরাত্মা); ভূতৈঃ (পঞ্চভূতের দ্বারা বেষ্টিত); তিষ্টতে (থাকেন)।
সরলার্থ: এই ব্রহ্ম থেকেই বিশাল সমুদ্র ও পর্বতমালা এসেছে এবং নদীসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে। ধানযবাদি সমুদয় বৃক্ষলতা এবং মধু ইত্যাদি সকল প্রকার খাদ্যরস এই ব্রহ্ম থেকেই উৎপন্ন। ব্রহ্ম আছেন বলেই সব কিছু আছে। ব্রহ্মই সকল বস্তুকে একসঙ্গে ধরে রেখেছেন। সূক্ষ্ম কোষ রূপে খাদ্যরসই অন্তরাত্মাকে বেষ্টন করে আছে।
ব্যাখ্যা: অন্তরাত্মা বলতে কী বোঝায়? আমাদের এই দেহ স্থূল। স্থূল শরীরের মধ্যে আছে সূক্ষ্ম শরীর। এই সূক্ষ্ম শরীরকে অন্তরাত্মাও বলা হয়। পঞ্চভূত ছাড়া স্থূলদেহ থাকতে পারে না। অর্থাৎ খাদ্য পানীয় ছাড়া স্থূলদেহ রক্ষা করা সম্ভব নয়। এই জন্যই স্থূলদেহকে অন্নময় কোষ বলা হয়। খাদ্য ও পানীয়ের অভাবে স্থূলদেহের মৃত্যু হয়। খাদ্য পানীয় রূপে পঞ্চভূত এই স্থূলদেহকে পরিপুষ্ট করে। আর এই দেহের অভ্যন্তরে আছেন অন্তরাত্মা। স্থূলদেহ ও আত্মার মধ্যবর্তী সূক্ষ্ম শরীরই অন্তরাত্মা। সূক্ষ্মরূপে পঞ্চভূত [অর্থাৎ তন্মাত্রা] এই অন্তরাত্মাকে ধারণ করে আছে।