অথর্বণে যাং প্রবদেত ব্রহ্মাঽথর্বা
তাং পুরোবাচাঙ্গিরে ব্রহ্মবিদ্যাম্।
স ভারদ্বাজায় সত্যবহার প্রাহ
ভারদ্বাজোঽঙ্গিরসে পরাবরাম্॥২
অন্বয়: ব্রহ্মা (ব্রহ্মা); যাম্ (যে ব্রহ্মবিদ্যা); অথর্বণে (অথর্বাকে); প্রবদেত (বলেছিলেন); অথর্বা (অথর্বা); তাম্ (সেই); ব্রহ্মবিদ্যাম্ (ব্রহ্মবিদ্যা); অঙ্গিরে (অঙ্গিরকে); পুরা (পুরাকালে); উবাচ (বললেন); সঃ (তিনি); ভারদ্বাজায় (ভরদ্বাজ গোত্রীয়); সত্যবহায় (সত্যবহকে); প্রাহ (বললেন); ভারদ্বাজঃ (ভারদ্বাজ অর্থাৎ সত্যবহ); পরাবরাম্ ([পরা—শ্রেষ্ঠ, প্রবীণ, যেমন গুরু, এবং অবরাম্—নিকৃষ্ট, তরুণ, যেমন ছাত্র] গুরু থেকে শিষ্য পরম্পরায়); অঙ্গিরসে [প্ৰাহী] (অঙ্গিরসকে বললেন)।
সরলার্থ: পুরাকালে ব্রহ্মা যে ব্রহ্মবিদ্যা অথর্বাকে দিয়েছিলেন, অথর্বা আবার সেই জ্ঞান ঋষি অঙ্গিরকে দিয়ে যান। অঙ্গির আবার সেই জ্ঞান ভরদ্বাজ-বংশীয় সত্যবহকে দেন। গুরু থেকে শিষ্য পরম্পরাক্রমে প্রাপ্ত এই জ্ঞান সত্যবহ আবার অঙ্গিরসকে দিয়ে যান।
ব্যাখ্যা: ব্রহ্মজ্ঞান গুরুমুখী বিদ্যা। এই জ্ঞান (এই মৌখিক বিদ্যা) পিতা থেকে পুত্রে, গুরু থেকে শিষ্যে, পরম্পরাক্রমে চলে আসছে। যিনি ব্রহ্মকে জেনেছেন তিনিই একমাত্র এই জ্ঞান দান করতে পারেন, কোন অজ্ঞ ব্যক্তি পারেন না। এ যেন একটা দীপ থেকে আর একটা দীপ জ্বালানো।
শিষ্যকে গুরুগৃহে বাস করতে হবে। গুরুর জীবন দেখে সে শিক্ষা লাভ করবে। ব্রহ্মজ্ঞান মানুষের জীবনকে পালটে দেয়। যিনি এই জ্ঞান লাভ করেছেন তিনি অন্য এক ব্যক্তিতে পরিণত হন। যীশুখ্রীষ্ট এদেরকেই পৃথিবীর সেরা মানুষ বলে চিহ্নিত করেছেন। এমন মানুষ আমাদের মধ্যে আছেন বলেই এ পৃথিবী আমাদের বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। এই জ্ঞানলাভই মানুষের জীবনের লক্ষ্য এবং আমরা তারই চেষ্টা করছি। আমাদের শাস্ত্রে বলে বই পড়া জ্ঞানই সব নয়। বই পড়ে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করা যায় না। সৎ-গুরুই একমাত্র এই জ্ঞান দিতে পারেন। সৎ-গুরুর নির্দেশেই এই ইন্দ্রিয়াতীত অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়।