অথ হৈনং কৌসল্যশ্চাশ্বলায়নঃ পপ্রচ্ছ। ভগবন্ কুত এষ প্রাণো
জায়তে কথমায়াত্যস্মিঞ্শরীর আত্মানং বা প্রবিভজ্য কথং
প্রাতিষ্ঠতে কেনোৎক্ৰমতে কথং বাহ্যমভিধত্তে কথমধ্যাত্মমিতি॥১
অন্বয়: অথ হ (তারপরে); কৌসল্যঃ আশ্বলায়নঃ (অশ্বলপুত্র কৌসল্য); এনং পপ্ৰচ্ছ (তাঁকে [পিপ্পলাদকে] জিজ্ঞাসা করলেন); ভগবন্ কুতঃ এষঃ প্রাণঃ জায়তে (ভগবান কোথা থেকে এই প্রাণ এসেছেন); অস্মিন্ শরীরে কথম্ আয়তি (এই শরীরে তিনি কিভাবে আসেন); আত্মানং প্রবিভজ্য (নিজেকে বিভক্ত করে); কথং বা প্রাতিষ্ঠতে (কিভাবে তিনি থাকেন); কেন উৎক্ৰমতে (কিভাবে তিনি [শরীর] পরিত্যাগ করেন); কথং বাহ্যম্ অভিধত্তে (কিভাবে তিনি বাইরের বস্তু অর্থাৎ জীবজন্তু ও পদার্থসমূহকে ধারণ করেন); কথম্ অধ্যাত্মম্ ইতি (অথবা শরীরের সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলি [কিভাবে ধারণ করেন])?
সরলার্থ: অতঃপর অশ্বলপুত্র কৌসল্য ঋষি পিপ্পলাদকে জিজ্ঞাসা করলেন : হে ভগবান, প্রাণ কোথা থেকে আসেন? শরীরে তিনি কিভাবে প্রবেশ করেন? কিভাবে তিনি নিজেকে সারা দেহে ছড়িয়ে দেন এবং কিভাবেই বা নিজের কর্ম সম্পাদন করেন? কি কৌশলে তিনি শরীর ছেড়ে বেরিয়ে যান? কিভাবে তিনি বাইরের বস্তু অর্থাৎ প্রাণী ও পদার্থসমূহকে ধারণ করেন? ইন্দ্রিয় ইত্যাদি শরীরের সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলিই বা কিভাবে তাঁকে আশ্রয় করে থাকে?
ব্যাখ্যা: এতক্ষণ আমরা প্রাণের বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। কিন্তু এই প্রাণের উৎপত্তি কোথা থেকে হল? এঁর উৎস কি এবং আরম্ভই বা কোথায়? এই জগতের স্রষ্টা কে? প্রশ্নটি অতি সঙ্গত। বেদান্ত মতে সৃষ্টি বলে কিছু নেই। ‘শূন্য’ থেকে কিছুর সৃষ্টি হতে পারে না। যদি দেখি কিছু আছে তাহলে ধরে নিতে হবে তার পূর্বেও কিছু ছিল। বেদান্তমতে ব্রহ্ম সদা বিদ্যমান এবং ব্রহ্মই এই জগতের আশ্রয়। বস্তুত ব্রহ্মই একমাত্র আছেন।
তাহলে প্রাণ কিভাবে শরীরে প্রবেশ করেন ও শরীর ত্যাগ করেন? পিপ্পলাদ আগেই বলেছেন, প্রাণ নিজেকে পাঁচটি অংশে ভাগ করেন। এই বিভাগ কেমন করে সম্পন্ন হয় এবং বিভিন্ন অংশের কাজই বা কি? প্রাণকে আমরা প্রাণী, কীটপতঙ্গ ও নানা পদার্থের মধ্যে দেখতে পাই। এই দৃশ্যমান জগতে প্রতিটি পদার্থ, প্রতিটি অংশ এবং প্রতিটি প্রাণীর নির্দিষ্ট কর্তব্য আছে। প্রাণ কিভাবে এই সবকিছুকে চালনা করেন? কিভাবেই বা প্রাণ দেহের ভিতরের ও বাইরের বিষয়সমূহকে ধারণ করে থাকেন?