আদিত্যো হ বৈ প্রাণো রয়িরেব চন্দ্রমা রয়ির্বা এতৎ সর্বং যন্মূর্তং চামূর্তং
চ তস্মান্মূর্তিরেব রয়িঃ॥৫
অন্বয়: আদিত্যঃ হ বৈ প্রাণঃ (আদিত্য-ই [সূর্য] প্রাণ); রয়িঃ এব চন্দ্রমা (খাদ্য হল চন্দ্র); যৎ মূর্তম্ অমূর্তং চ (যা কিছু স্থূল [অর্থাৎ কার্য] অথবা সূক্ষ্ম [অর্থাৎ কারণ]); এতৎ বৈ সর্বং রয়িঃ (এই সবই খাদ্য [অর্থাৎ কার্য]); তস্মাৎ মূর্তিঃ রয়িঃ এব (অতএব স্থূলই খাদ্য [কার্য])।
সরলার্থ: আদিত্যই (সূর্যই) প্রাণ; চন্দ্রই রয়ি অর্থাৎ অন্ন। স্থূল বা সূক্ষ্ম উভয়ই খাদ্য। খাদ্য (কার্য) ও খাদ্যের ভোক্তার (কারণ) মধ্যে যা পার্থক্য, স্থূল ও সূক্ষ্মের মধ্যে সেই একই পার্থক্য।
ব্যাখ্যা: এখানে উপনিষদের বক্তব্য হল—জগতে দুটি বস্তু আছে। আসলে বস্তু এক, কিন্তু কোন ভাবে এই এক ভাগ হয়ে দুই হয়েছে—একজন ভোক্তা বা প্রাণ এবং অপরটি খাদ্য বা জড়পদার্থ। সূর্যই প্রাণ। প্রাণ থাকলে সেই প্রাণকে ধারণ করার জন্য অন্নও থাকবে। রয়ি বা চন্দ্রই হল সেই অন্ন। আপাতদৃষ্টিতে প্রাণ আর রয়ি দুই হলেও বস্তুত তারা এক, আলাদা নয়।
কার্য ও কারণের মধ্যে যে সম্পর্ক জগতে সব যুগলবস্তুর মধ্যেই সেই সম্পর্ক বিদ্যমান। কারণ সূক্ষ্ম এবং কার্য স্থূল। বেদান্তমতে, কারণ অধিকাংশ সময়েই নিরাকার অর্থাৎ ‘অমূর্ত’। তাকে দেখা যায় না। কিন্তু কার্যকে দেখা যায় এবং তার রূপ আছে অর্থাৎ ‘মূর্ত’।
অবশ্য কার্য ও কারণ এবং অন্ন ও অন্নভোক্তা পরস্পর সম্পর্ক বিনিময় করতে পারে। এ যে সম্ভব হয় তার কারণ তারা এক এবং অভিন্ন।