নাহং মন্যে সুবেদেতি নো ন বেদেতি বেদ চ।
যো নস্তদ্বেদ তদ্বেব নো ন বেদেতি বেদ চ॥২
অন্বয়: নাহং মন্যে (আমি মনে করি না); সুবেদেতি [সুবেদ ইতি] (আমি সম্যক্ রূপে একে জানি); নো ন বেদেতি [বেদ ইতি] ( এও নয় যে আমি জানি না); বেদ চ (এবং আমি জানি); নঃ (আমাদের মধ্যে [শিষ্যদের মধ্যে]); যঃ (যে কেউ); তৎ (সেই উক্তি [অর্থাৎ সেই উক্তির অর্থ]); নো ন বেদেতি [বেদ ইতি] বেদ চ (জানি না তাও নয়, জানি তাও বলতে পারি না); বেদ (তিনি জানেন); তদ্ (সেই [অর্থাৎ ব্রহ্মকে]); বেদ (জানেন)।
সরলার্থ: (ব্রহ্মকে) সম্যক্ জেনেছি এমন কথা আমি মনে করি না। জানি না তাও নয়, আবার জানি—তাও বলতে পারি না। শিষ্যদের মধ্যে উপরি-উক্ত বাক্যের অর্থ যিনি জানেন, তিনিই (ব্রহ্মকে) সঠিক জানেন।
ব্যাখ্যা: ‘নো ন বেদ ইতি, বেদ চ’—এই বাক্যটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। যদি কেউ একথা বলেন, তবে বুঝতে হবে তাঁর ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছে। আমরা দেখেছি এই বাক্যের আক্ষরিক অর্থ হল, ‘এমন নয় যে আমি ব্ৰহ্মকে জানি না, আবার জানি এ কথাও বলতে পারি না’। এখন প্রশ্ন হল, যদি তিনি সত্যই ব্রহ্মকে জেনে থাকেন, তবে একথা কেন বলছেন, ‘আমি ব্রহ্মকে জানি, এ কথাও বলতে পারি না’? আসলে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বোঝাতে চাইছেন যে, ব্রহ্ম বই বা আসবাবপত্রের মতো কোন জ্ঞেয় বস্তু নন। স্থূল কোন বস্তুকে ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে জানা যায়, কিন্তু ব্রহ্মকে ঠিক সেইভাবে জানা যায় না, কারণ ব্রহ্মই মানুষের অন্তরাত্মা, অম্ভরতম সত্তা। ব্রহ্মকে জানার অর্থ হল, ব্রহ্মই যে আমাদের আত্মা সেটি জানা। যখন কেউ দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন, ‘নো ন বেদ ইতি, বেদ চ’ তখন বুঝতে হবে—তিনি জানেন যে তিনিই স্বয়ং ব্রহ্ম।