ন তত্র চক্ষুর্গচ্ছতি ন বাগ্গচ্ছতি নো মনঃ।
ন বিদ্মো ন বিজানীমো যথৈতদনুশিষ্যাৎ॥৩
অন্বয়: তত্র (সেখানে [অর্থাৎ যেখানে ব্রহ্ম আছেন]); চক্ষুঃ ন গচ্ছতি (চোখ যেতে পারে না); ন বাক্ গচ্ছতি নো মনঃ (যা বাক্য এবং মনের অতীত); ন বিদ্মঃ (আমরা জানি না [এই ব্রহ্মের স্বরূপ কি); যথা (কি ভাবে); এতৎ (এই [ব্রহ্ম]); অনুশিষ্যাৎ (গুরু শিষ্যের কাছে ব্যাখ্যা করেন); ন বিজানীমঃ ([তাও] আমাদের কাছে দুর্বোধ্য [অর্থাৎ আমরা জানি না])।
সরলার্থ: ব্রহ্ম যেখানে, সেখানে আমাদের দৃষ্টি পৌঁছতে পারে না। তা আমাদের বাক্য এবং মনেরও অতীত। আচার্য এ দুরূহ তত্ত্ব কিভাবে শিষ্যের কাছে ব্যাখ্যা করেন তা আমরা জানি না।
ব্যাখ্যা: ব্রহ্ম আমাদের ইন্দ্রিয়গুলির ধরাছোঁয়ার বাইরে। তিনি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নন। তাঁর সম্পর্কে তাই আমরা কিছুই বলতে পারি না। তিনি অসীম—এতই বিশাল যে, আমাদের মন তাঁর ধারণা করতে পারে না। তাই আচার্য বলছেন, ‘ন বিদ্মঃ ন বিজানীমঃ’—আমরা জানি না, আমরা জানি না। কেন আমরা জানি না? কারণ, ব্রহ্ম জ্ঞানের বিষয় নন। আমাদের থেকে আলাদা একটা বস্তুকে আমরা জানতে পারি, কিন্তু ব্রহ্মকে পারি না। কারণ আমরাই ব্রহ্ম। আমাদের থেকে যা পৃথক তাকেই আমরা জানতে পারি, কিন্তু নিজের আত্মাকে আমরা কখনই দেখতে পাই না। ব্ৰহ্ম সর্বদাই জ্ঞাতা, বিষয়ী। তিনি কখনও জ্ঞেয় বা জ্ঞানের বিষয় হতে পারেন না। বস্তুত যা কিছু আছে, সব ব্রহ্ম। জ্ঞাতা এবং জ্ঞেয় বস্তুর পার্থক্য অথবা বিষয়ী এবং বিষয়ের মধ্যে যে পার্থক্য, অ আমাদের কল্পনা।