তদ্যে হ বৈ তৎ প্রজাপতিব্রতং চরন্তি তে মিথুনমুৎপাদয়ন্তে।
তেষামেবৈষ ব্ৰহ্মলোকো যেষাং তপো ব্রহ্মচর্যং যেষু সত্যং
প্রতিষ্ঠিতম্॥১৫
অন্বয়: তৎ (সেহেতু); যে হ বৈ (যাঁরা); তৎ প্রজাপতিব্রতং চরন্তি (প্রজাপতির নিয়ম পালন করেন); তে মিথুনম্ উৎপাদয়ন্তে (সন্তানের জন্ম দেন); তেষাম্ এব এষঃ ব্রহ্মলোকঃ (তাঁরাই শুধু ব্রহ্মলোক প্রাপ্ত হন); যেষাং তপঃ ব্রহ্মচর্যম্ (যাঁরা কৃচ্ছ্রসাধন করেন এবং সংযত জীবন যাপন করেন); যেমু সত্যং প্রতিষ্ঠিতম্ (যাঁরা সত্যে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত)।
সরলার্থ: এমন অনেক গৃহস্থ আছেন যাঁদের বিবাহিত জীবন প্রজাপতির জীবনাদর্শে গড়া। তাঁরা প্রজাপতির মতোই নির্দিষ্ট নীতি অনুযায়ী সন্তানের জন্ম দেন। তাঁদের মধ্যে কিছু মানুষ আবার কঠোর ও সংযত জীবন যাপন করে থাকেন। তাঁরা সত্যেও দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত। মৃত্যুর পর এরকম ব্যক্তি চন্দ্রলোক অর্থাৎ পিতৃলোকে যান। তাঁদের পক্ষে এটিই ব্রহ্মলোক।
ব্যাখ্যা: তপস্যা ও আত্মসংযম (ব্রহ্মচর্য) অভ্যাস করে এবং কায়মনোবাক্যে (অর্থাৎ কর্মে, চিন্তায় ও কথায়) সত্যে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত (সত্যং প্রতিষ্ঠিতম্) থেকে গৃহস্থ ব্রহ্মলোক (বস্তুত চন্দ্রলোক) লাভ করতে পারেন। গৃহস্থই হোন বা সন্ন্যাসী, সকলকেই সত্যপালন করতে হবে। এখানে ‘ব্রহ্মচর্য’ কথাটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ হল আত্মসংযম। এমনকি বিবাহিত জীবনেও আত্মসংযমের প্রচুর অবকাশ আছে। প্রজাপতির দৃষ্টান্তই গৃহস্থদের অনুসরণ করতে হবে।
আত্মাই ব্রহ্ম এবং সেই আত্মাকে উপলব্ধিই প্রত্যেকের জীবনের লক্ষ্য। কেউ গৃহস্থ হতে পারেন, তাঁর পরিবার-পরিজনও থাকতে পারে কিন্তু তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই; শুধু সকলকে তাঁদের লক্ষ্য ঠিক রেখে চলতে হবে।