মাসো বৈ প্রজাপতিস্তস্য কৃষ্ণপক্ষ এব রয়িঃ শুক্লঃ প্রাণস্তস্মাদেত
ঋষয়ঃ শুক্ল ইষ্টং কুর্বন্তীতর ইতরস্মিন্॥১২
অন্বয়: মাসঃ বৈ প্রজাপতিঃ (মাসও প্রজাপতি); তস্য কৃষ্ণপক্ষঃ এব রয়িঃ (এর মধ্যে কৃষ্ণপক্ষ অন্ন); শুক্লঃ প্রাণঃ (শুক্লপক্ষ প্রাণ); তস্মাৎ (এই কারণে); এতে ঋষয়ঃ (ঋষিগণ); শুক্লে ইষ্টং কুর্বন্তি (শুক্লপক্ষে তাঁদের ক্রিয়াকর্ম অনুষ্ঠান করেন); ইতরে (অন্যরা); ইতরস্মিন্ (অন্যপক্ষে [অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষে])।
সরলার্থ: বৎসরের মতো মাসও প্রজাপতির প্রতীক। কৃষ্ণপক্ষ তাঁর অন্ন (চন্দ্র), শুক্লপক্ষ তাঁর প্রাণ (আদিত্য যিনি সেই অন্ন গ্রহণ করেন)। এই কারণেই ঋষিরা, যাঁরা প্রাণ অনুসন্ধান করছেন তাঁরা শুক্লপক্ষে বৈদিক ক্রিয়াকর্মের অনুষ্ঠান করে থাকেন। অন্যরা সেইসব অনুষ্ঠান কৃষ্ণপক্ষেই করেন।
ব্যাখ্যা: সমগ্র পৃথিবী প্রজাপতিকে আশ্রয় করে আছে। এর আগে প্রজাপতিকে বৎসর রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু যদি প্রজাপতিকে একটি মাস হিসেবে ধরা হয় তবু প্রজাপতি প্রজাপতিই থাকেন। প্রজাপতির দুটি ভাগ—প্রাণ (জীবন) এবং রয়ি (অন্ন)। তেমনি মাসেরও দুটি ভাগ—শুক্লপক্ষ এবং কৃষ্ণপক্ষ।
যাঁরা যাগযজ্ঞ করেন তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আত্মজ্ঞান লাভ করতে চান। তাঁরা এইসব আচার-অনুষ্ঠান শুক্লপক্ষে করা পছন্দ করেন। অন্যরা যাঁরা স্বর্গকামনা করেন অথবা যাঁদের অন্য কোন বাসনা আছে তাঁরা এইসব অনুষ্ঠান করার জন্য কৃষ্ণপক্ষকেই বেছে নেন।
বস্তুত যার যেমন ভাব, সে সেইভাবে যজ্ঞকর্মের উপযুক্ত সময় বেছে নেয়। ইন্দ্রিয়সুখই যাঁর উদ্দেশ্য তাঁর কাছে শুক্লপক্ষই কৃষ্ণপক্ষ হয়ে ওঠে। আবার আত্মজ্ঞান লক্ষ্য হলে সেই ব্যক্তির জন্য কৃষ্ণপক্ষও শুক্লপক্ষে পরিণত হয়।