অথাধ্যাত্মং—যদেতদ্গচ্ছতীব চ মনোঽনেন
চৈতদুপস্মরত্যভীক্ষ্নং সঙ্কল্পঃ॥৫
অন্বয়: অথ (এখন); অধ্যাত্মম্ (যা জীবাত্মার মনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত); মনঃ এতৎ যং গচ্ছতি ইব চ (মন যেন তাঁতে [ব্রহ্মে] গমন করে [প্রবেশ করে]); চ অনেন (এবং এর দ্বারা); এতৎ অভীক্ষ্নম্ উপস্মরতি ([সাধক] নিরন্তর তাঁর [ব্রহ্মের] ধ্যান করেন); সঙ্কল্পঃ ([এইভাবেই তাঁর উচিত] মনকে চালনা করা)।
সরলার্থ: এখানে ব্রহ্ম সম্পর্কে যে নির্দেশ পাওয়া যাচ্ছে তা জীবাত্মার মনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত; মনই যেন ব্রহ্মে পৌঁছায় এবং মন দিয়েই সাধক নিরন্তর ব্রহ্মের মনন করেন। এই ভাবেই মনকে চালানো উচিত।
ব্যাখ্যা: জীবাত্মার ক্ষেত্রে তার মনই ব্রহ্মশক্তির শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত। মনের অসীম শক্তি। কেন মনকে শক্তিমান বলা হচ্ছে? কারণ এই মন ব্রহ্মের দিকে ধেয়ে যায়, ব্রহ্মকে ধরার চেষ্টা করে। দুরূহ হলেও এই মন দিয়েই সাধক ব্রহ্মকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করে। মনই ব্রহ্মকে আত্মারূপে ধ্যান করতে পারে। কিন্তু মনের এই ক্ষমতাও ব্রহ্ম থেকেই আসে। বিদ্যুতের মতো, মনের শক্তির উৎসও ব্রহ্ম। আমরা ব্রহ্মের চিন্তা করতে পারি না তার কারণ আমাদের মন অশুদ্ধ এবং তাতে বড্ড বেশী আমিত্ব। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁদের মন শুদ্ধ এবং ইচ্ছাশক্তি প্রবল (‘সঙ্কল্প’)। যেমন শ্রীরামকৃষ্ণ। তাঁর শুদ্ধ মনে আমিত্বের লেশ মাত্র ছিল না। এমন মনের শক্তি অসীম। এ মন ব্রহ্মের খুব কাছাকাছি। তাই এই উপনিষদ জীবাত্মার (অধ্যাত্ম) অভিজ্ঞতা থেকে এই দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন।